ছবিসূত্র : ৯৯৯ জরুরী সেবা
বয়ঃসন্ধি একটি সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একটি শিশুর শরীর একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরে রূপান্তরিত হয় এবং প্রজননের সক্ষমতা লাভ করে। এ সময় আমাদের শরীর বিভিন্ন ধরনের হরমোন উৎপাদন শুরু করে যার ফলে মস্তিষ্ক, অস্থি, পেশি, ত্বক, স্তন, এবং জনন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গসমূহের বৃদ্ধি শুরু হয়। বয়ঃসন্ধিকালের মধ্যভাগে এই বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয় এবং বয়ঃসন্ধিকাল শেষ হবার মাধ্যমে এই বৃদ্ধি সম্পূর্ণ হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে মানুষের ১০ থেকে ১৯ বছর পর্যন্ত সময়টাকে বলে বয়ঃসন্ধি কাল। এই সময় শারীরিক বিভিন্ন পরিবর্তনের ফলে কিশোর-কিশোরীরা নতুন জগতে প্রবেশ করে। তাদের চিন্তা-চেতনায় দেখা দেয় ব্যাপক পরিবর্তন। শারীরিক পরিবর্তনের পাশাপাশি মানসিক বিকাশ এবং দায়িত্ববোধ যোগ হতে থাকে। অর্থাৎ বয়ঃসন্ধি হলো একাধারে দৈহিক, মানসিক এবং সামাজিক একটা অভিজ্ঞতা।
শারীরিক পরিবর্তন
মানুষের শরীরে বিভিন্ন ধরণের হরমোন তৈরি হয় এবং শরীর কখন ও কিভাবে বাড়বে তা নিয়ন্ত্রণ করে। একটি ছেলে যখন শৈশব পেরিয়ে বয়ঃসন্ধিকালে প্রবেশ করে তখন তার পুরুষ হরমোন টেস্টোস্টেরন তৈরি হতে থাকে। অন্ডকোষ সৃষ্ট এ টেস্টোস্টেরন পুরুষের যৌন গ্রন্থির গঠন এবং যৌন লক্ষণ প্রকাশে সাহায্য করে। আমাদের দেশে ১১ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে মানুষের যৌনাঙ্গ এবং প্রজননতন্ত্রের পূর্ণ বিকাশ ঘটে থাকে।
ছেলেদের ক্ষেত্রে বিকাশ পর্ব টি ১১ থেকে ১৭ বছর ।
- এ বয়সেই একটি ছেলের জীবনে প্রজনন ক্ষমতার সূচনা হয়।
- তার উচ্চতা বাড়ে।
- কাঁধ চওড়া হয়।
- কণ্ঠস্বর ভারী হয়।
- লিঙ্গের গোড়া ও বগলে লোম গজায়।
- অন্ডকোষে শুরু হয় শুক্রকোষ উৎপাদন।
আমাদের দেশের মেয়েদের শারীরিক গঠনের পরিবর্তন ১০ থেকে ১৩ বছর বয়সের মধ্যে শুরু হয়। এ সময়টা হলো মেয়েদের বয়ঃসন্ধি কাল ।
- এ বয়সে মেয়েদের উচ্চতা বাড়ে।
- নিতম্ব প্রশস্ত ও স্তন স্ফীত হয়।
- বগল ও যৌনাঙ্গের আশপাশে লোম গজায়।
- ডিম্বাশয়ে ডিম্বাণু তৈরি হয় এবং প্রতিমাসে ঋতুস্রাব শুরু হয়।
মানসিক পরিবর্তন
- অজানা বিষয়ে জানার কৌতূহল বাড়ে।
- শরীরের পরির্বতনের ফলে চলাফেরায় দ্বিধা দ্বন্দ্ব ও লজ্জা কাজ করে।
- নিকট জনের মনোযোগ যত্ন ও ভালোবাসা পাওয়ার ইচ্ছা তীব্র হয়।
- আবেগ দ্বারা পরিচালিত হওয়ার প্রবণতা বাড়ে।
- ছেলেমেয়েদের পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ বাড়ে।
- মানসিক পরিপক্বতা পর্যায় শুরু হয়।
আচরণের পরির্বতনঃ
- প্রাপ্ত বয়স্কদের মতো আচরণ করে।
- বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে নিজেকে একজন আলাদা ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করে।
- দুঃসাহসিক ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়ে।